অঢেল সম্পদের মালিক গণপূর্তের প্রকৌশলী কায়কোবাদ
শত কোটি টাকা কামিয়েছেন গণপূর্তের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ?
আপলোড সময় :
২২-১১-২০২৪ ০৩:৩৫:০৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২২-১১-২০২৪ ০৩:৩৫:০৯ অপরাহ্ন
গণপূর্তের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর থেকে সরকারি আমলা এবং আ.লীগের এম.পি মন্ত্রীরা এখন দেশ থেকে পালিয়েছেন। অনেকে ছাত্র জনতা এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আবার ধরাও খাচ্ছেন। ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে একটাই সেটা হচ্ছে দেশকে একটি সোনার বাংলা গড়ে তোলা। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এখনো অনেকেই অধরা রয়ে গেছে। এবার দুর্নীতিবাজ গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ই/এম সার্কেল-২,ঢাকা মো. কায়কোবাদ এর নাম উঠে এসেছে। যেকোন সময় ধরা খাবেন তিনি। তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কায়কোবাদ: গণপূর্ত অধিদপ্তরের ই-এম সার্কেল-২ এর প্রকৌশলী মো. কায়কোবাদ গণপূর্ত অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলীর নাম ভাঙ্গিয়ে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। নিয়োগ-বদলী ও পদোন্নতি ছাড়াও অনিয়ম এবং দুর্নীতির খবর যাতে ফাঁস না হয়, সেজন্য তার (কায়কোবাদ) নেতৃত্বে একটি নিদিষ্ট সিন্ডিকেট নির্বাহী প্রকৌশলীদের নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
উক্ত সিন্ডিকেটের সদস্যরা হলেন, ফয়সাল, যিনি সাবেক প্রধান প্রকৌশলীর ষ্টাফ অফিসার বর্তমানে নির্বাহী প্রকৌশলী (উন্নয়ন) গনপূর্ত ভবন। রয়েছেন কল্যান কুমার কুন্ড; তিনি প্রধান প্রকৌশলীর ষ্টাফ অফিসার বর্তমানে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) মিরপুর। আছেন রাজীব-নির্বাহী প্রকৌশলী সার্কেল-১ বর্তমানে অথরাইড অফিসার রাজউক। টিটু উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী ধানমন্ডি, বর্তমানে নির্বাহী প্রকৌশলী। কায়কোবাদের নেতৃত্বে এইচক্রটি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সূত্র নিশ্চিত করেছে নির্বাহী প্রকৌশলী পবিত্র কুমার দাস, সাজেদুল, আব্দুল হালিম, আনোয়ার হোসেন, সমীরণ মিস্ত্রি, জাহাঙ্গীর আলম, প্রত্যেকের নিকট থেকে প্রধান প্রকৌশলীর নাম ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই সিন্ডিকেট।
গণপূর্তের সাবেক প্রধান প্রকৌশলীর বিশ্বস্থ সহচর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর আস্থাভাজন হওয়ার চেষ্টা করছেন কায়কোবাদ।অনিয়ম ও দুর্নীতির সমস্ত অলিগলি কায়কোবাদের চেনা বা জানা। গনপূর্ত অধিদপ্তরের ই-এম সার্কেল-২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কায়কোবাদের অধীনে রয়েছে ইএম বিভাগ ৪, ৫,৭ প্রতিটি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর দুর্নীতি ও অনিয়মের আলাদা খতিয়ান। অথচ এ সমস্ত অনিয়ম ও দুর্নীতির দায় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এড়াতে পারে না। ই-এম বিভাগ-৫ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরেও কাজ না করে বিল তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একটা প্রশ্ন নির্বাহী প্রকৌশলী যদি কাজ না করে বিল তুলে নিয়ে যায় তাহলে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কাজটা কি? শুধু বসে কমিশন খাওয়া? না অন্য কিছূ? একজন তত্তাবধায়ক প্রকৌশলীর তার বেতন কত? তা বিশ্লেষণ করলেই প্রমাণ হয় তিনি কতটুকু ও নিষ্ঠাবান। মো. কায়কোবাদের বাবার নাম ইউনুস আলী সরকার। জাতীয় পরিচয় পত্র নং-১৯৬৭২৬৯৯০৪০৭২১৬০১ তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী, গনপূর্ত ই-এম সার্কেল-২। তার অধীনে ৩ জন নির্বাহী প্রকৌশলী আছেন। ই-এম বিভাগ-৪, মো. মহিবুল ইসলাম, ই-এম বিভাগ-৬ পবিত্র কুমার দাস। প্রত্যেক নির্বাহী প্রকৌশলীর আলাদা আলাদা দপ্তর। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে রয়েছে আলাদা আলাদা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ।
কায়কোবাদ গনপূর্ত ই-এম সার্কেল চট্রগ্রাম থেকে ঢাকার গুরুত্বপূর্ন ই-এম সার্কেল-২ এর পদায়ন করা হয়েছে। সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলমের সময় তিনি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (ই-এম) গনপূর্ত ই-এম প্লানিং সার্কেলে কর্মরত ছিলেন। ওই সময় তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ছিলো। তিনি তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলীর নাম ভাঙ্গিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।সাবেক প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ যদি দুদক অনুসন্ধান করতে পারে, ক্ষমতার জোরে আশরাফুল আলমের ক্যাশিয়ার খ্যাত মো. কায়কোবাদের বিষয়ে অনুসন্ধান চালানো হয়নি। অভিযোগ রয়েছে তিনি বৈধ ও অবৈধভাবে বিপুল পরিমান জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন। দেশে বিদেশে তার তার ও পরিবারের সদস্যদের নামে বেনামে রয়েছে বিপুল পরিমান সম্পদ। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডের বিলাস বহুল ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। ঢাকার ধামরাইতে তার একটি ১০ তলা ফাউন্ডেশন ভবনের কাজ চলমান রয়েছে। তার গ্রামের বাড়ী শেরপুরে রয়েছে নামে বেনামে অঢেল সম্পদ। পরিবারের ব্যবহারের জন্য রয়েছে লেটেস্ট মডেলের প্রিমিও গাড়ী। তার সার্কেলের সকল কাজের উপর ৪ থেকে ৫ শতাংশ হারে টাকা কমিশন গুনে গুনে নেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। একটি সার্কেলে পুরো অর্থবছরের যত কাজ হয় তার ৫ শতাংশ যদি তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী পায় তাহলে তার বছরে আয় কত?
যে ভাবে কমিশন আদায় হয় : প্রথমে একজন ঠিকাদার কাজ পাওয়ার আগেই জমা দেওযার সময় উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর দপ্তরের নির্দিষ্টহারে কমিশন নগদ টাকা জমা দিয়ে কাজ নিতে হয়। শুরু হয় টাকা নেওয়ার পালা। এবার নির্বাহী প্রকৌশলী ও তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলীর দপ্তরের নির্দিষ্ট হারে কমিশনের টাকা বন্টন করতে হয়। সূত্র ও তথ্য মতে উপ-সহকারী প্রকৌশলী, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ৫ শতাংশ মোট ১০ শতাংশ এবং নির্বাহী প্রকৌশলীর জন্য ১০ শতাংশ ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর দপ্তরে ৫ শতাংশ অর্থ দিতে হয় ঠিকাদারদের। এছাড়া অন্যন্য খাতে ২-৩ শতাংশ হারে কমিশনের টাকা নগদে প্রদান করতে হয়। ঠিকাদারের কাজ নেয়া থেকে শুরু করে বিল পাওয়া পর্যন্ত ২৫ থেকে ২৮ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন দিতে হয়। মোট বিলের উপর ভ্যাট ও এআইটি বাবদ ১৫ শতাংশসহ প্রায় শতাংশ। ক্ষেত্র বিশেষ আরও ১-২ শতাংশ বেশি কমিশন দিতে হয়।
এসব বিষয়ে তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কায়কোবাদের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
চলমান পর্ব (—–১)
নিউজটি আপডেট করেছেন : News Upload
কমেন্ট বক্স